প্রকাশিত: Fri, Feb 10, 2023 4:36 PM
আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 10:03 AM

আক্রান্ত মারজান বললেন, প্রশাসন শুধু অভিযোগ শোনে, ব্যবস্থা নেয় না

সালেহ্ বিপ্লব: মারজান আক্তার চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যলয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি দৈনিক সমকালের চবি প্রতিনিধি। বৃহস্পতিবার পেশাগত দায়িত্বপালনকালে তিনি একটি মহলের বাধার মুখে পড়েন। 

ক্যাম্পাসে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছে চারুকলার শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।  বৃহস্পতিবার আন্দোলনের ভিডিও করতে গেলে কয়েকজন কর্মী তাকে বাধা দেন। 

ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে শেয়ার করে মারজান বলেছেন, শুধু আমার সাথে নয়, কয়েকজন সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয় আন্দোলনের বিরোধীরা। ২৩ সেকেন্ডের ঐ ভিডিও ক্লিপের বাইরেও অনেক কিছু হয়েছে। আরটিভির সিনিয়র সাংবাদিক এমরাউল কায়েসকেও হেনস্তা করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবেই চারুকলার আন্দোলনের ছবি ও  ভিডিও নিতে গিয়ে দেখি, শহীদ মিনারে একদল শিক্ষার্থী আন্দোলনে বাধা দিচ্ছে। আমি ভিডিও ও ছবি নিতে থাকি। তারা আমাকে ছবি নিতে বারণ করে। আমি জানাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক প্লেসে আমি আমার দায়িত্বপালন করছি। এরপরও তারা ভিডিও নিতে মানা করে। আমি ভিডিও রেকডিং বন্ধ না করায় তারা আমাকে নিয়ে কৌতুক করতে থাকে এবং বুদ্ধিজীবী চত্বরে সরে যায়। 

মারজান বলেন, মূল ঘটনা ঘটে, যখন তারা যখন বুদ্ধিজীবী চত্বরে পাশে কয়েকজনকে ধাওয়া করতে যায়। আমি সেই ফুটেজ সংগ্রহ করতে যাই। পেছন থেকে কয়েকজন ডাক দিয়ে বলে, ‘এই আপু ভিডিও করতেছেন কেন? ভিডিও ডিলিট করেন। আমি আবারও সাংবাদিক পরিচয় দেই। তারপর আমাকে চার পাশ থেকে ১০-১৫ জন ঘিরে ধরে। বারবার চিৎকার করে ভিডিও ডিলিট করার জন্য বলতে থাকে। আমি যখন বলি, এটা তো আপনাদের জায়গা না। পাশ থেকে একজন বলে ওঠে, এটা ওদেরই জায়গা এবং আমাকে ভিডিও ডিলিট করেই যেতে হবে। তারা আমার নিরাপত্তার হুমকি দেয়, ব্যাগ নিয়ে যেতে চায়। আমি যখন তাদের মধ্য থেকে চলে আসার চেষ্টা করি আমার ব্যাগ টান দেয়। এ সময় তারা বলে, ‘বেশি বাড়ছোস। তোর সিকিউরিটি কে দেয় দেখে নিবো।’  

মারজান বলেন, এরপরও তারা বার বার আমাকে নিয়ে শহীদ মিনারের সামনে কৌতুক করছিলো। আমার উপর আবার চড়াও হয় আরেক গ্রুপ। তখন আমি জোর গলায় দায়িত্বপালন করছি বলে উত্তর দেয়ায় তারা আমাকে ‘মেন্টাল’ বলে বুলিইং করতে থাকে। এ সময় চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) অন্য সদস্যদের আইডি কার্ড চেক করার নামে আবারও চড়াও হয় এক কর্মী।

শুক্রবার বিকেলে আমাদের নতুন সময়ের সঙ্গে ফোনালাপে মারজান বলেন, এর আগেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবগুলোর সঠিক সমাধান করতে পারেনি। বার বার এমন ঘটনায় পার পাওয়ায় সাহস পায় তারা। আমি চাইনা এই ধরনের ঘটনা আর কারো সাথে হোক। আমরা শুধু আমাদের কাজ আমরা নির্বিঘ্নে করে যেতে চাই ।

তিনি বলেন, ঘটনার পর পরই আমি প্রক্টরকে ফোন করেছিলাম। তিনি ফোন রিসিভ করেননি। শুক্রবারও আমি প্রক্টরকে ফোন দিয়েছি। হোয়াটস অ্যাপে ঘটনার ভিডিও পাঠিয়েছি। ওই ভিডিওতে সবাইকে চেনা যাচ্ছে, যারা সাংবাদিকদের হেনস্তা করেছে। কিন্তু প্রক্টর ফোন ধরেননি। হোয়াটস অ্যাপের মেসেজ সিন করেছেন, কিন্তু কোনও রেসপন্স করেননি।

মারজান আক্তার বলেন, ঘটনা ঘটার পর বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন এমনই আচরণ করে। অভিযোগ দিলে শুনে কিন্তু কোনো প্রতিকার করে না। ২০২২ সালে সাংবাদিক নির্যাতনের তিনটি ঘটনা ঘটেছে, একটিরও প্রতিকার মেলেনি। আমি যেটা বুঝতে পারছি, বিচার পেতে হলে প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। এখন এই চাপ কে সৃষ্টি করবে, সেটাই প্রশ্ন। সম্পাদনা: খালিদ আহমেদ